হারানো লেখা - ২
বঙ্কিমচন্দ্রের লেখাই কেবল পাঠকরুচির বদল ঘটাচ্ছে না, বইয়ের ছাপার বৈশিষ্ট্যও পাঠকরুচির পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অকাদেমি থেকে প্রয়াত অধ্যাপক অলোক রায়ের সম্পাদনায় বঙ্কিমচন্দ্রের যে রচনাবলি প্রকাশিত হয়েছে তাতে ‘দুর্গেশনন্দিনী’ উপন্যাসের অলঙ্করণ হিসেবে ব্যবহৃত কাঠখোদাই ছবি চোখে পড়ে – ‘কপালকুণ্ডলা’য় অলঙ্করণ হিসেবে কোনও কাঠখোদাই ছবি নেই। একদিক থেকে তা পাঠকের পক্ষে স্বস্তিদায়ক। কারণ প্রকৃতি ও রমণীরূপের যে শব্দচিত্র বঙ্কিমচন্দ্র এঁকেছিলেন তা কাঠখোদাই ছবিতে প্রকাশ করা অসম্ভব। একমাত্র ওয়েল বা ওয়াটার কালার অলঙ্করণ যথাযথ হত। সেভাবে অলঙ্করণ তখন অসম্ভব। সমরেশ বসুর সঙ্গে বিকাশ ভট্টাচার্যের যুগলবন্দী ‘দেখি নাই ফিরে’। তেমন কোনও যুগলবন্দী সংস্করণ ‘কপালকুণ্ডলা’র জন্য কোনও বাঙালি প্রকাশক ভাবেননি। তাই বঙ্কিমের লেখার শব্দে বাঙালি পাঠক মন হারান কিন্তু ‘কপালকুণ্ডলা’র এমন কোনও চিত্রিত সংস্করণ বাঙালি পাঠকের হাতে আসে না। এ পাঠকেরই দুর্ভাগ্য।